ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : পর্যটকবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকাডুবিতে ১৮ জনের প্রাণহানির ঘটনায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মামলার প্রধান আসামিসহ তিনজনকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ আর এই ঘটনা নেত্রকোনায় মদনের উচিতপুর হাওরের।
গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি ট্রলার মালিক উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুলিয়াটি গ্রামের নূরুল হকের ছেলে লাহুত মিয়াকে (৪১) সোমবার রাতে উচিতপুর ট্রলারঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া নৌকার দুইজন মাঝি উচিতপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে আল আমিন ওরফে শাহাদাদ (২৮) এবং কুলিয়াটি গ্রামের আলাদ মিয়ার ছেলে কায়রুল ইসলামকে (৩০) থানার সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ৫ আগস্ট ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরখরিচা গ্রামের ও গৌরীপুর উপজেলা থেকে ৪৮ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী পর্যটকবাহী যাত্রী উচিতপুর ট্রলারঘাট থেকে ভাই ভাই ট্রলারে হাওর ভ্রমণে বের হয়। ট্রলারটি উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের রাজালীকান্দা নামক স্থানে পৌঁছলে ঝড়োহাওয়ার কবলে পড়ে ট্রলারডুবে ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।
এ নিয়ে ইউএনও জনাব, বুলবুল আহমেদকে প্রধান করে ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ১৯ আগস্ট ২০২০ জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
তবে তদন্তে বলা হয়েছিল প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলারে বেঁচে যাওয়া যাত্রী, স্থানীয় উদ্ধারকর্মী, প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতদের অভিভাবকদের বক্তব্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধে পাঁচটি সুপারিশও করা হয়। ফলে তাৎক্ষণিক নৌকার মালিকসহ মাঝিরা এ আইনের ফাঁকফোকর থেকে বের হয়ে যায়। তবে তাৎক্ষণিক এ প্রতিবেদন নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া শুরু হয় সচেতন মহলের মধ্যে।
পরে ঢাকার বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নৌ আদালতে মামলা হয়। এতে নৌকার মালিক লাহুত মিয়া ও দুই মাঝিকে আসামি করে নৌপুলিশ। এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।
মদন থানার ওসি জনাব, ফেরদৌস আলম বলেন, নৌকার মালিক লাহুত মিয়া, মাঝি আল আমিন ও খায়রুলকে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানায় সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের নেত্রকোনা কোর্টহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।