শনিবার, ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, সন্ধ্যা ৭:০৭

৭৫তম জন্মদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : দেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দিনটি ছিল ১৯৮১ সালের ১৭ মে।
যে পিতা জীবনের সুবর্ণ সময়গুলো সঁপে দিয়েছিলেন বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে, অন্তরালে থেকে যে মা সাহস যুগিয়েছেন পিতার সংগ্রামে, দেশের স্বাধীনতার জন্য যিনি বিসর্জন দিয়েছেন ব্যক্তিগত আনন্দ, কিংবা আদরের ভাই এবং কেউ ছিল না সেদিন বিকেলবেলা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বুকে টেনে নেয়ার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এ সময়
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় ঘাতকদের নির্মমতার হাত থেকে বেঁচে যান।
১৯৮১ সালের সেই বিকেলে (সাড়ে ৪টায়) ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের বোয়িং বিমানে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে পৌঁছান
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কালবৈশাখী উপেক্ষা করে মুজিবকন্যাকে বরণ করে নিতে সেদিন ছিলেন লাখো কর্মী-সমর্থক। তাদের অফুরান ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে, অঝোরে কাঁদলেন তিনি। জনতার সমুদ্রে দাঁড়িয়ে কণ্ঠ থেকে যেন নিঃসৃত হচ্ছিল না কোনো শব্দ। বলেছিলেন, আমার আর হারাবার কিছুই নেই।
নিজেকে সামলে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন আরও বলেছিলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ফিরে আসা ছিল দেশের একটি রাজনৈতিক আদর্শ ও ধারার ঘুরে দাঁড়ানোর যাত্রাবিন্দু। এর ১৫ বছর পর ১৯৯৬ সালে তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
দেশভাগের বছর অর্থাৎ ১৯৪৭ সালে সদ্য স্বাধীনতা পাওয়া রাষ্ট্র পাকিস্তানের পূর্ব অংশের গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর জন্ম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবং বতর্মানে ৭৫তম জন্মদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
আনন্দ, সংগ্রাম, বেদনাবিধুর নানা ঘটনাপ্রবাহের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী তিনি, সব মিলিয়ে চারবার। ৭৫ বছর বয়সে এসে বাংলাদেশের রাজনীতির নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এমন এক সময় তিনি পঁচাত্তরে পা দিলেন যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার অভ্যুদয়ের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে। সেদিক থেকে এই রাষ্ট্রের নিয়তির সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন জড়িয়ে আছে। খুব কম রাষ্ট্রনায়কের ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটেছে।
নিজের অর্জনেই ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তবে আরও একটি পরিচয় তাকে বড় করে তোলে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে তিনি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। শিশু বয়সেই চলে আসেন ঢাকায়। বড় হয়ে ওঠা সেখানেই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাধ্যমিক বা মেট্রিক পাস করেন ঢাকার আজিমপুর গার্লস স্কুল থেকে। এরপর ভর্তি হন সে সময়ের ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজে (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়)। স্নাতক পাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
দুই সন্তানের জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণুবিজ্ঞানী জনাব, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে বিয়ে করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় ২৭ জুলাই জন্ম হয় প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম নেয় কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা। বাংলাদেশ পেয়েছে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপরিসীম আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়ে সারাবিশ্বে হয়েছেন প্রশংসিত। বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে করোনাকালেও দেশের প্রবৃদ্ধি এশিয়ায় প্রায় সব দেশের ওপরে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বাণিজ্য, আইসিটি এবং এসএমই খাতে এসেছে ব্যাপক সাফল্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতিসহ
করোনা টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতা। জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঝুলিতে জমেছে অনেকগুলো অর্জন। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক অনেক সম্মাননা ও পদক। এ পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক পুরস্কারের সংখ্যাও অনেক।