ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : গ্রাহকের কাছে এখন থেকে পণ্য সরবরাহ করার আগে সেই পণ্যের জন্য আগাম কোন অর্থ পাবে না ইভ্যালিসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লোভনীয় নানা রকম অফার দিয়ে গ্রাহকের কাছে পণ্য সরবরাহের আগেই অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অর্থ নিচ্ছে এবং তা নিয়ে মানুষের হয়রানির অভিযোগ এসেছে।
সেজন্য কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পণ্য গ্রাহকের হাতে পৌঁছানোর পরই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অর্থ পাবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা নিয়ন্ত্রণ করবে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, সরকারি এই সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিয়ে এখন সেভাবে তারা তাদের নীতিমালা তৈরি করবে।
ইভ্যালি এবং আলেশা মার্টসহ ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সর্বশেষ দু’টি বেসরকারি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়া, ক্রেডিট, ডেবিট এবং প্রি-পেইড কার্ডের লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে।
এর আগে ব্র্যাক ব্যাংক লেনদেন বন্ধ করেছে।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর যে বৈঠক হয়, সেই বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব, মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর পেমেন্ট পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন।
তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হবে যে পণ্য ডেলিভারির পর গেটওয়েরা যখন তথ্য পাবে, এটা নিশ্চিত হওয়ার পর তারা পেমেন্টটা ই-কমার্স কোম্পানির জন্য রিলিজ করবে।
পণ্য ডেলিভারির আগ পর্যন্ত তারা পেমেন্টটা হোল্ড করে রাখবে, বলেন জনাব, মি. রহমান।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডে লেনদেনের গেটওয়ে আছে, এর মাধ্যমে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে গ্রাহকের লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করবে।
এমন সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জনাব, মি. রহমান বলেছেন, সমস্যা হচ্ছে যে, কিছু ই-কমার্স কোম্পানি ভোক্তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যথাসময়ে পণ্য দিচ্ছে না। এবং কিছু কোম্পানির হাতে অনেক ভোক্তার টাকা জমা হয়ে গেছে।
কিছু মার্চেন্ট যারা পণ্য সরবরাহ করে, তাদেরও টাকা জমা হয়ে আছে। এসব কোম্পানির কাছে। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইভ্যালি একটা। এর সাথে আরও কোম্পানি আছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেই কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন জনাব, মি. রহমান।
তবে ইভ্যালিসহ বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহ করার তিনমাস আগে গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে।
এই অর্থ নেয়ার ক্ষেত্রে অর্ধেক দামে বা কম দামে পণ্য দেয়ার নানা রকম লোভনীয় অফার দেয়া হচ্ছে। এটাই এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার অন্যতম ভিত্তি বলা হয়।
কিন্তু এই পদ্ধতিতে মানুষের হয়রানির নানা অভিযোগের তুলে ধরে সরকারি কর্তৃপক্ষ এখন বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে।