ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : যুবতী তাহমিনা আক্তার (২৫), ২০২০ সালের ২৩ জুন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। দুই দিন পর ২৫ জুন দুপুরে বালু নদীর গাজীপুরের কালীগঞ্জের নগরভেলা গ্রামের বাহুরঘাট এলাকা থেকে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে উলুখোলা ফাঁড়ির পুলিশ। খবর পেয়ে বড় বোন জাহানারা বেগম লাশটি ছোট বোন তাহমিনার বলে শনাক্ত করেন।
তাহমিনা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে মর্মে সবাই ধারণা করে। তিনি কালীগঞ্জের মধ্য পানজোরা গ্রামের কৃষক তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে ছিলেন। পর দিন এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়।
কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরে যায় মৃতের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পুলিশের হাতে আসার পর। ওই রিপোর্টে উঠে আসে পানিতে ডুবে নয়, ধর্ষণের পর পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে তাহমিনাকে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে চাঞ্চল্যকর হিসেবে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় গাজীপুর পিবিআই।
রবিবার রাতে ঘটনার মূলহোতা উপজেলার নগরীতে অবস্থিত ইউনিলিভার কারখানার নিরাপত্তা প্রহরি রুবলেকে (২৫) আটক করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোশারফ হোসেন। সে উপজেলার নরুন গ্রামের উসমান গণির ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সোমবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
পিবিআই গাজীপুর ইউনিটের পুলিশ সুপার জনাব, মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, রুবেল আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে ঘটনার দিন তাহমিনা চাকরির জন্য ইউনিলিভারে গিয়েছিল। চাকরি দেওয়া কথা বলে সে এবং অন্য কয়েকজন প্রহরি মিলে তাহমিনাকে কারখানার পাশে তাদের মেসে নিয়ে যায়। সেখানে রুবেলসহ অন্যান্যরা মিলে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
পরবর্তীতে রাতে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সিএনজি ভাড়া করে উলুখোলা ব্রিজে নিয়ে যায়। সেখানে সবাই মিলে মুখ চেপে ধরে ব্রিজের রেলিংয়ের ওপর দিয়ে বালু নদীতে নিক্ষেপ করে হত্যা করে। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।