শুক্রবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, রাত ৪:০৮

গ্রেফতার ২ জন, রিসোর্টে গোপন ক্যামেরায় দম্পতির অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণ এবং চাঁদা দাবি।

ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : একটি রিসোর্টের বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে ব্যক্তিগত মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে দম্পতির কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ আর এই ঘটনা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) অভিযান চালিয়ে পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার দুজন হলেন, সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার চড়িপারা এলাকার আবুল কালামের ছেলে রেজোয়ান (২৩) ও শহরের বিরাইমপুর এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে খালেদ মিয়া (২৭)। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ জুলাই কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসেন ওই দম্পতি। রাত্রীযাপনে তারা ওঠেন উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কের তামিম রিসোর্টে। রিসোর্টের দুই কর্মচারী বাথরুমে টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে দম্পতির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে। ঘটনার কিছু দিন পর ওই দম্পতির মোবাইল ফোনের ইমু নাম্বারে ফোন করে বলা হয়, তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও আছে। এ বিষয়ে তাদের ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়া হয়।
তারপর ২১ অক্টোবর নাদিরা আক্তার রুমি নামে একটি আইডি থেকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ওই দম্পতির কাছে তাদের অন্তরঙ্গ দৃশ্যের ছবি পাঠায় আসামিদ্বয়। পরে ওই নাম্বার থেকে বাদীর ইমু নাম্বারে কল করে হুমকি দিয়ে বলা হয়, এই ছবি ও ভিডিও ফেরত পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। যদি টাকা দেয়া না হয়, তাহলে তাদের এই ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেয়া হবে বলে হুমকি দিতে থাকে আসামিদ্বয়।
এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় ভুক্তভোগী দম্পতি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে গত বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভিকটিম দম্পতি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুই অভিযুক্তকে আসামি করে মামলা করেন।
শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল আমিন জানান, আসামিরা বাদীর কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ফেসবুকে ওই দম্পতির বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের কমেন্ট বক্স ও ম্যাসেঞ্জারে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে থাকে। মামলার পর পুলিশ তাদের আটক করে দুটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করে। প্রাথমিকভাবে আসামিরা পুলিশের কাছে তাদের অপকর্মের স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
এ বিষয়ে তামিম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী হারুন মিয়া জানান, কর্মচারীরা কী করেছে তা আমার জানা নেই। তারা একসময় আমার এখানে ছিল, এখন নেই।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা দ্রুত দুই আসামিকে গ্রেফতার করি। আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। এই ঘটনায় মালিকপক্ষের কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি-না, তা তদন্ত করে বের করা হবে।