বুধবার, ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বিকাল ৩:১২

নিবন্ধনহীন তিন কোটি মোবাইল ফোন বন্ধ হবে না।

ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : ১ জুলাই থেকে সব অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট বন্ধ হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জনাব, শ্যামসুন্দর শিকদার। এতে বর্তমানে যে হ্যান্ডসেটগুলো গ্রাহকের হাতে রয়েছে তা নিয়ে জনমনে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে বর্তমানে যেসব অবৈধ হ্যান্ডসেটে সংযোগ চালু আছে সেগুলো নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর রমনায় বিটিআরসি কার্যালয়ে টেলিকম সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ১ জুলাই সব চালু সেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপারেটরদের মাধ্যমে নিবন্ধন হয়ে যাবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, গ্রাহকদের কোনো সমস্যায় ফেলতে চাই না আমরা। গ্রাহকের হাতে থাকা হ্যান্ডসেটগুলোতে অটোমেটিক সিস্টেমে নিবন্ধন করতে চাই। তবে, নতুন হ্যান্ডসেট যেগুলো আসবে সেগুলো অবশ্যই নিবন্ধন হয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো ১৬ জানুয়ারি ম্যানুয়ালি জানাবে নতুন কোন হ্যান্ডসেটগুলো তাদের নেটওয়ার্কে আছে। এগুলো ম্যানুয়ালি অননেট চেক করে পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে জানানো হবে সেটটি বৈধ কি অবৈধ। সে হিসেবে পরবর্তী কাজ করা হবে।
অবৈধ মোবাইল সেট বন্ধ ও বৈধ সেটের নিবন্ধনে ডিসেম্বরে বিটিআরসির সঙ্গে চুক্তি করে দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার্ড (এনইআইআর) সিস্টেম চালু করতে হবে তাদেরকে।
বিটিআরসির তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ কোটি আইএমআই নম্বর এবং সাত কোটি মোবাইল সেটের তথ্য নক অটোমেশন অ্যান্ড আইএমইআই ডেটাবেজ (এনএআইডি) সিস্টেমে সংযোজিত হয়েছে। এ সিস্টেমের আইএমইআইগুলো, মোবাইল অপারেটরের ইআইআর এবং বিটিআরসিতে স্থাপিত জাতীয় পর্যায়ের কেন্দ্রীয় এনইআইআর একটি সমন্বিত সিস্টেম হিসেবে কাজ করবে। এনইআইআর সিস্টেমটি সরাসরি প্রত্যেক মোবাইল অপারেটরের নিজ নিজ ইআইআরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।
গ্রাহকদের মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়ে চালু হবে। দেশে নিবন্ধনহীন মোবাইলের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি।
এদিকে, দেশের বাইরে থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেনা হ্যান্ডসেট বা উপহার হিসেবে আসা স্মার্টফোনগুলো গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এনইআইআর এর ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে কেনার রসিদ যাচাই করে এবং যেসব সেট উপহারের যথেষ্ট প্রমাণ যাচাই-বাছাই করে বিটিআরসির সিদ্ধান্তে এনইআইআরে সক্রিয় করা হবে।
অপারেটরদের ইআইআর তৈরির পর তা জাতীয় ইআইআর (এনইআইআর) এ সংযুক্ত হবে। এর ফলে অপারেটরদের ইআইআর খুব সহজেই নজরদারি করতে পারবে বিটিআরসি। ইআইআর ও এনইআইআর বাস্তব সময়ে সিঙ্ক্রোনাইজেশন হবে অর্থাৎ ইআইআরে ডেটা সংযুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা এনইআইআরে চলে আসবে।
সরকারি কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ব্যবসায়ীদের হিসেবে, দেশে বর্তমানে প্রায় তিন কোটি অবৈধ হ্যান্ডসেট মানুষের হাতে রয়েছে। নকল মোবাইল সেট বৈধের সুযোগ, অবৈধ আমদানি, চুরি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নকল হ্যান্ডসেট প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত, রাজস্ব ক্ষতি ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে আসছে বিটিআরসি। খসড়া নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, অপারেটররা তাদের লাইসেন্স নীতিমালা অনুযায়ী সব মোবাইল হ্যান্ডসেটের ইএমআই নম্বর দিয়ে এই ডেটাবেজ তৈরি করবে।
এদিকে, বিটিআরসি বার বার সতর্কতা জানিয়ে বলে আসছে, মোবাইল হ্যান্ডসেট কেনার আগে আইএমইআইর মাধ্যমে সেটটির বৈধতা যাচাই করে নিতে হবে। বিক্রেতার কাছ থেকে হ্যান্ডসেট কেনার রশিদ নিতে হবে।
মোবাইল ফোনের বৈধতা যাচাইয়ের পদ্ধতি হল মোবাইল ফোনের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে KYD স্পেস ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে 16002 নম্বরে পাঠাতে হবে। মোবাইল ফোনের প্যাকেটে প্রিন্টেড স্টিকার থেকে অথবা *#06# ডায়াল করার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট হ্যান্ডসেটের আইএমইআই জানা যাবে।