বুধবার, ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, রাত ১২:০৭

সরকারের নগদ অর্থ দেওয়ার সিদ্ধান্ত।

ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : অসচ্ছল অন্তঃসত্ত্বা নারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নগদ অর্থ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অন্তঃসত্ত্বা নারী গর্ভকালীন চারবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রতিবার এক হাজার টাকা হারে মোট চার হাজার টাকা নগদ অর্থ পাবেন। আপাতত দেশের রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর, ময়মনসিংহ ও শেরপুর জেলার মোট ৪৩টি উপজেলায় এ সুবিধা চালু হচ্ছে। মায়েদের পাশাপাশি ৬০ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্যও টাকা দেবে সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ‘ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট (আইএসপিপি)-যত্ন (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প’ গ্রহণ করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের অসচ্ছল-দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং মায়েদের সুনির্দিষ্ট সেবা গ্রহণের সুবিধা দিতে নগদ অর্থ দেওয়া হবে। একইসঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে কমন ইমপ্লিমেন্টেশন প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা এবং শিশু পুষ্টি ও সচেতনতা বাড়ানোসহ স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সহায়তা বাড়ানোই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানসহ জনসচেতনতার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা উন্নয়ন বাড়বে। প্রকল্পটি ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেয়েছে। টাকা দেওয়া হবে শিশুদেরও
সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় কম্পোনেন্ট-১ এর আওতায় দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারীদের গর্ভকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া ছাড়াও শূন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী শিশুদের জন্য প্রতি মাসে গ্রোথ পরীক্ষার জন্য প্রতিবার ৭০০ টাকা হারে অর্থ দেওয়া হবে। ২৫ থেকে ৬০ মাস বয়সী শিশুদের প্রতি তিন মাস অন্তর গ্রোথ পরীক্ষার জন্য প্রতিবার এক হাজার ৫০০ টাকা হারে অর্থ দেওয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও মায়েদের জন্য প্রতিমাসে শিশু পুষ্টি ও উন্নত শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য প্রতিবার ৭০০ টাকা হারে অর্থ দেওয়া হবে। অর্থায়ন পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংক ও ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিএ) যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট প্রকল্প ব্যয় ধরেছে এক হাজার ৯০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ (জিওবি) ১৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বিভিন্ন কারণে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়। সেই সব কারণের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্প থেকে ৫০ (পঞ্চাশ) মিলিয়ন ডলার প্রত্যাহার করায় মোট প্রকল্প ব্যয় কমানোর জন্য প্রকল্পটি সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের পরিবর্তন এবং ডলারের মূল্য (১ ডলার= ৮৫.০০ টাকা) হালনাগাদ করে তৃতীয় সংশোধিত ডিপিপি’র ব্যয় নির্ধারণ করা এবং প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত কিছু আইটেমের ব্যয় সমন্বয় করার কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করে একনেক অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও মায়েদের পুষ্টি, শিক্ষা, সন্তানের গ্রোথ মনিটরিংয়ের জন্য ভাতা প্রদান, সুফলভোগীদের মনিটর করার লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষতা উন্নয়ন, মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানসহ জনসচেতনতার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা উন্নয়ন হবে। তাই স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট (আইএসপিপি)-যত্ন (৩য় সংশোধিত)’- শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। গ্রামের গরিব অন্তঃসত্ত্বা নারীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত হবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে। একই সঙ্গে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান এবং জনসচেতনতার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের দক্ষতা উন্নয়ন হবে।