ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : পটুয়াখালীর বাউফলের ৪নং কেশবপুর ইউনিয়নের ৯ নং মমিনপুর ওয়ার্ডে উত্তর মমিনপুর গ্রামে ইতি আক্তার নামের এক তরুণী বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে যাওয়ায় তরুণীকে বেধরক এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেছেন প্রেমিক ও প্রেমিকের বাবা হাশেম গাজী সহ অনেকেই। আহত অবস্থায় তরুণীকে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এক সাক্ষাৎকারে প্রতিবেদককে তরুণী জানান, তিন বছর আগ থেকে প্রতিবেশি মোঃ রাব্বি (২৪) নামে ঐ যুবকের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক হয়। সর্বশেষ গত এক মাস আগে তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে রাব্বি। রাব্বিকে যখনি বিয়ের কথা বলি,তখনই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। আমি নিরুপায় হয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে রাব্বির বাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি তাঁর চাচা স্থানীয় প্রভাবশালী ইউপি সদস্য মোঃ শাহজাহান গাজীকে বিষয়টি জানাই এবং রাব্বির বাবা-মাকেও জানানো হয়।
অতঃপর বিয়ের দাবিতে ঐ ঘরে অবস্থান নিলে এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে রাব্বির বাবা-মা স্বজনেরা ওই তরুণীকে মারধর করে ঘরের পশ্চিম পাশে বারান্দায় ফেলে রাখে। রাতে ওই বারান্দায় ছিলেন তরুণী। পরবর্তীতে শনিবার সকালে ফের মারধর করে ঘরের সামনে উঠানে আহত অবস্থায় ফেলে রাখা হয় তরুণী ইতি আক্তারকে। একপর্যায়ে বাড়ির উঠানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকেন তরুণী।
অপরদিকে, ঘটনার পরিস্থিতি খারাপ দিকে ধাবিত হওয়ায় ঘটনার পর থেকেই প্রেমিক রাব্বী গাজী ও তাঁর পরিবার গাঁ ঢাকা দিয়েছেন এবং রাব্বি ও তার পরিবার ঘরে তালা লাগিয়ে কোথায় গেছে কেউ বলতে পারে না। অন্যদিকে, এ ঘটনা দামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রেমিকের চাচা স্থানীয় প্রভাবশালী ইউপি সদস্য মোঃ শাহজাহান গাজী।
এক সাক্ষাৎ এ তরুণীর মা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের এই নির্যাতনের খবর পেয়ে বিকেলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করি এবং পুলিশ দ্রুতই খবর পেয়ে আমাদের বাড়িতে এসে আমার মেয়ে (ইতি)কে উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
তিনি আরও বলেন, রাব্বির চাচা স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্রভাবশালী। তিনি এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য বলেছেন। বাড়াবাড়ি করলে তাঁর স্বামীকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন। তাঁর মেয়ে সুস্থ হলে এ ঘটনায় তাঁরা আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।
এক সাক্ষাৎকারে রাব্বির চাচা ইউপি সদস্য মোঃ শাহজাহান গাজী বলেন, শুনেছি প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মেয়ের বয়স কম, ১৮ বছর হয়নি। তাই আমার পক্ষে বিয়ে পড়ানো সম্ভব না। এলাকার প্রত্যক্ষদর্সীরা জানে মেয়ের বয়স কত হয়েছে এবং আমার জানা মতে মেয়ের বয়স সম্ভবত ১৪/১৫। বিয়ে দেওয়ার বয়স না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছি। কিন্তু মেয়ের অভিভাবকেরা তা মানতে চান না। মারধরের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, হাত ধরে ওকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে কোন মারধর করা হয়নি এবং কাউকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়নি। এ অভিযোগ একদম সত্য না। আর ওই মেয়ে বিয়ের দাবিতে নিজের ইচ্ছে গাছের সাথে নিজের মাথা নিজে আঘাত করেছে যার স্বাক্ষী বাড়ির অনেকেই।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জনাব, আল মামুন বলেন, তরুনীকে শনিবার বিকালে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তরুনী পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এম.সাইদুর রহমান সংবাদদাতা বাউফল।