শনিবার, ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, রাত ৮:২৭

এক স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

ডেইলি ক্রাইম বার্তা ডেস্ক : বাড়ির মালিকের ছেলের যৌন হয়রানি ও বদনাম সহ্য করতে না পেরে সামিয়া নামে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী মা-কে চিঠি লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে আর এই ঘটনা বরগুনা শহরের কলেজ সড়ক খামারবাড়ি এলাকায়।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে বাসার গোসলখানা থেকে গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসী অভিযুক্ত বাড়ির মালিকের ছেলে দুই সন্তানের জনক জামালকে (৩২) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
নিহত সামিয়ার পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, সামিয়ার বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হলে পাঁচ-ছয় মাস আগে তার মা দ্বিতীয় স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে কলেজের উত্তর পাশে খামার বাড়ির সামনে আবুল বাশার নামে জনৈক ব্যক্তির বাসা ভাড়া নেয়। পাশে এক বাসায় আবুল বাশারের ছেলে জামাল স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন।
জামাল প্রায়ই সামিয়া বাথরুমে গোসলে গেলে উঁকি দিয়ে দেখতেন এবং অশ্লীল ইঙ্গিত করতেন। বিষয়টি সামিয়া তার মা-কে এবং জামালের স্ত্রীকে জানান। এলাকার অনেকেই বিষয়টি জেনে যায়। সামিয়াকে বাইরে দেখলেই অশ্লীল মন্তব্য ও ইঙ্গিত করতেন জামাল। একপর্যায়ে সামিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দেয় জামাল। দুদিন আগে জামাল অশ্লীল মন্তব্য করলে ফোনে জামালের বাবাকে জানান সামিয়ার মা।
সামিয়ার মা সুমি আক্তার সাংবাদিকদের জানান, শনিবার বাথরুমে সামিয়া গোসলকরার সময় জামাল উঁকি দিয়ে দেখলে সামিরা পানি ছুড়ে মারেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল অশ্লীল গালি দেন।
আত্মহত্যার আগে সামিয়া তার মাকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে বলে, মা আমার নামে তারা যে বদনাম উঠিয়েছে তাতে আমি এই পৃথিবীতে থাকতে পারি না। আমি একটি খারাপ মেয়ে, আমি নাকি খুব খারাপ। মা, তুমি ভালো থেকো। আমাকে কেউ, বিশ্বাস করে না, তুমি ছাড়া।
ইতি, তোমার সামিয়া।
বরগুনা সদর সার্কেলের এএসপি জনাব, মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে এ বিষয় তদন্ত করেন। তিনি বলেন, আমরা একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি। এ বিষয়ে সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। এলাকাবাসী উত্তাক্ত্যকারীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তদন্ত করে আত্মহত্যার কারণ জানা যাবে এবং তিনি আরও জানান এ ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।